ক্যাপ্টেন ভেনেনোর বিয়ের প্রস্তাব
অনুবাদঃ ফজল হাসান
‘হায় ঈশ্বর ! কি অদ্ভুত ধরনের মহিলা !’ ক্যাপ্টেন রীতিমতো চিৎকার করে এবং রাগে-ক্ষোভে পা দিয়ে সজোরে মেঝেতে আঘাত করে ।
মেজাজের পারদ উপরে থাকতেই ক্যাপ্টেন পুনরায় বললো, ‘কোনো কারণ ছাড়াই কি আমি এভাবে কাঁপছি । আসলে প্রথম দেখার পর থেকেই আমি তার ভয়ে ভীত এবং তটস্থ । অবশ্যই এটা আমার তকদিরের জন্য একটা সংকেত যে, আমি তার সঙ্গে লুকোচুরি খেলা বন্ধ করেছি । সে একটা আজব মহিলা, অথচ তার কথা ভেবে আমি কত রাত অনিদ্রায় কাটিয়েছি । কেউ কি আমার চেয়ে বেশি মানবীয় ?
তাকে দেখভাল করার জন্য কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে আমি কেমন করে ছেড়ে যাবো, যাকে আমি এত বেশি ভালোবাসি, এমনকি নিজের চেয়েও ঢের বেশি ? এবং অন্যদিকে, বিয়ে শাদীর বিরুদ্ধে এমন গালভরা ভারি এবং উল্টোপাল্টা কথা বলার পরে আমি কি ভাবে তাকে বিয়ে করি ?’
তারপর আউগুস্তিয়াসের দিকে মুখ ফিরিয়ে ক্যাপ্টেন একনাগাড়ে বলতে শুরু করে, ‘ক্লাবে সবাই আমাকে নিয়ে কি বলবে ? এছাড়া লোকজন রাস্তায় আমার বাহুবন্ধনে কোনো মহিলাকে, কিংবা ঘরের ভেতর কাপড়ে মোড়ানো কোনো শিশুকে দুধ খাওয়াতে দেখলে আমার সম্পর্কে কি বলবে ? আমার – আমার কি সন্তান-সন্ততি থাকবে ? ওদের নিয়ে আমি কি সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় সময় কাটাবো ? ওরা হয়তো অসুস্থ থাকবে, কিংবা মারা যাবে, সেই অবিরাম ভয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত ভীত-সন্ত্রস্ত থাকতে হবে ? আউগুস্তিয়াস, বিশ্বাস করো, আমাদের ওপরে এজন ঈশ্বর আছেন, আমি এ কাজে সম্পূর্ণ ভাবে অযোগ্য । তোমার সঙ্গে আমি এমন ব্যবহার করবো যেন তুমি অধৈর্য্য হয়ে আমাকে তালাক দিয়ে দূরে সরে যাও, নতুবা বিধবা হও । আমার পরামর্শ শোনোঃ আমি বললেও তুমি আমাকে বিয়ে করো না ।’
‘তুমি একটা অদ্ভূত মানুষ,’ চেয়ারে আঁটসাঁট হয়ে বসে যুবতী রমনী নিজেকে সংযত করে সাদামাটা গলায় বললো । তারপর একটু থেমে সে আরো বললো, ‘এ পর্যন্ত তুমি শুধু তোমার কথাই বললে । তবে তোমার কথার সারর্মম হলো, আমি তোমাকে বিয়ে করি এবং তোমার প্রস্তাব গ্রহণ করি, এমনকি আমি যেন একলা না থাকি এবং অন্যসব এতিম মেয়েদের মতো দিনরাত কাজ করি ।’
‘কি ভাবে আমি এমন কঠিন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি ?’ জবাবে ক্যাপ্টেন অকপট ভাবে বললো । ‘তার কারণ, অন্য কিছু হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই । কেননা আমরা একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসি, যারপরনাই মহব্বত করি । একজন আরেক জনের জন্য আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে । একজন পুরুষ, যেমন আমি, এবং একজন নারী, যেমন তুমি, কখনই অন্যভাবে বেঁচে থাকতে পারে না । তুমি কি ভেবেছ, আমি কিছু বুঝি না ? তোমার কি মনে হয় না যে, আমি এ বিষয়ে আগেভাগেই ভাবনা-চিন্তা করেছি ? তুমি কি মনে করো, তোমার কাছে আমি আলাদা কোনো মানুষ ? আমি আমার সিদ্ধান্ত এবং দৃঢ় বিশ্বাস থেকে বিচ্যুৎ না হওয়ার জন্য কথাটা খোলামেলা ভাবে বলেছি । তুমি কি ভেবেছ যে, তোমাকে কথাটা বলার কারণ হচ্ছে আমি দোদুল্যমান ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এবং দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি চাই, কিংবা উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পাই এবং তোমাকে বিয়ে না করি, অথবা তুমি তোমার একলা জীবনের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকলে আমি যেন তোমাকে বিচ্যুৎ হওয়ার জন্য বাধ্য না করি ।’
‘একলা ! একলা !’ দুষ্টুমির ভঙ্গিতে আউগুস্তিয়াস কথাটা পুনরাবৃত্তি করে । ‘কেন একজন মহা মূল্যবান এবং বিশিষ্ট সঙ্গীর সঙ্গে নয় ? তোমাকে কে বলেছে, আমি যাকে পছন্দ করি, একদিন তার সঙ্গে আমার দেখা হবে না এবং এমন কোন পুরুষ আছে, ভয় পেয়ে যে আমাকে বিয়ে করতে সাহসী হবে না ?’
‘আউগুস্তিয়াস ! চলো, আমরা প্রসঙ্গ পাল্টাই !’ ক্যাপ্টেন রীতিমতো গর্জন করে বললো । তার সমস্ত মুখমন্ডল আরক্তিম হয়ে ওঠে ।
‘এ প্রসঙ্গে আমরা কেন কথা বলবো না ?’
‘চলো, আমরা বিষয়টি এখানেই নিষ্পত্তি করি এবং একই সঙ্গে আমাকে একটা কথা বলতে দাও । আমি অই লোকটিকে খুন করবো, যে তোমাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব নিয়ে আসবে । কিন্তু বিনা কারণে আমার রাগ করা শোভা পায় না । আমি এতটা বেয়াকুব না যে, আমাদের সম্পর্ক সম্বন্ধে আমি মোটেও ওয়াকিবহাল নই । আমার কাছে সবকিছু স্পষ্ট এবং আমি ভালো করেই জানি । তোমাকে বলবো ? আসলে আমরা একজন আরেকজনকে গভীর ভাবে ভালোবাসি । আমাকে বলো না যে, আমি ভুল বলেছি । সে-টা হবে ডাহা মিথ্যা কথা এবং এখানেই তার প্রমাণঃ তুমি যদি আমাকে ভালোই না বাসো, তাহলে আমার তরফ থেকে তোমাকে ভালোবাসার কোনো প্রয়োজন নেই । চলো, পুনরায় নতুন করে পরিচয়ের জন্য আমরা অপেক্ষা করি – ধরো, দশ বছর । আমার বয়স যখন পঞ্চাশ হবে, আমি দূর্বল চিত্তের বুড়োভাম হবো এবং একধরনের দাসত্বের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটবে, তখন নিজেদের অপরিচিত ভেবে আমরা বিয়ে করে মাদ্রিদে বসবাস করবো । আমরা এমন সব জায়গাতে ঘুরে বেড়াবো যেখানে কোনো পরিচিত মানুষ থাকবে না এবং আমাকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করবে না । কিন্তু সেই পরিস্থিতি না আসা পর্যন্ত তুমি আমার আয়ের অর্ধেকটা নিতে পারো । আমি কথা দিলাম, ঘূর্ণাক্ষরে কেউ জানতে পারবে না । তুমি তোমার এখানে থাকতে পারো এবং আমি আমার বাড়ীতে থাকবো । আমরা একে অপরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করবো, তবে তা হবে লোকজনের উপস্থিতিতে – ধরো, কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে । এছাড়া আমরা প্রতিদিন চিঠি চালাচালি করবো । তবে তোমার সুনাম রক্ষার্থে আমি কখনই তোমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করবো না । স্মরণীয় দিনে শুধু আমরা রোসার সঙ্গে কবরস্থানে যাবো ।’
ক্যাপ্টেনের প্রস্তাবের শেষটুকু শোনার পর আউগুস্তিয়াস হাসি চেপে রাখতে পারেনি । কিন্তু তার সেই হাসিতে উপহাসের কোনো চিহ্ন ছিল না, বরং আন্তরিক এবং আনন্দ মিশ্রিত হাসি ছিল । তার মনে হয়েছে, বুকের বাগানে যেন কোনো গোপন আশার কলি ফুটেছে এবং তার আপন জগতে সুখ-আনন্দের আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়ছে । কিন্তু একজন নারী হিসেবে, যদিও সে দারুণ সাহসী এবং অন্যদের চেয়ে আলাদা, সে তার সুখ-উল্লাসকে গোপন রাখতে সক্ষম হয় । বরং বাস্তবে সে চোখেমুখে এমন ভাব ফুটিয়ে তোলে যেন তার মনের ভেতর আশার টিমটিমে কোনো আলো জ্বলেনি । নিজের অনুভূতিকে গোপন রেখে সে শান্ত এবং নরম গলায় বললোঃ
‘তোমার অদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য তুমি নিজেকে হাসির পাত্র করেছ । তুমিই কিন্তু বাগদানের আংটির শর্ত দিয়েছ, যা তোমার কাছে কেউ চায়নি ।’
‘শুধু সমঝোতার জন্য আমি বিকল্প পথের হদিস জানি । কিন্তু বাস্তবে আমার কাছে এটাই একমাত্র খোলা পথ । আরাগন থেকে আগত হে আমার যুবতী রমনী, আপনি কি পুরোটা বোধগম্য করতে পারছেন ? একজন পুরুষ, সে-ও আরাগন থেকে এসেছে, আপনার দরবারে এসে কুর্নিশ করে ভিক্ষা প্রার্থনা করছে । সমস্যা সমাধানের জন্য এটাই তার কাছে উত্তম এবং শেষ ভরসা ।’
আউগুস্তিয়াস ঘাড় ঘুরিয়ে সরাসরি ক্যাপ্টেনের দিকে তাকায় । তার চোখেমুখে অবর্ণনীয় আকুলতা, মনোহর প্রশান্তি এবং প্রত্যাশার নির্মল ছায়া ছড়িয়ে পড়ে ।
ক্যাপ্টেন আগে কখনো আউগুস্তিয়াসের চোখেমুখে এমন বিমোহিত অভিব্যক্তি দেখেনি । সেই মুহূর্তে তার মনে হলো, মহারানীর অবয়ব নিয়ে আউগুস্তিয়াস তার সম্মুখে এসে হাজির হয়েছে ।
‘আউগুস্তিয়াস,’ সাহসী সৈনিক রীতিমত তোতলায় । অথচ এই সৈনিক কত শত বার বুলেট ছুঁড়েছে এবং বাঘের মতো তার হিংস্রতা অনেক যুবতী মেয়ের কাছে ছিল ভীষণ জনপ্রিয় । খানিকটা সময় নিয়ে সৈনিক বলতে শুরু করে, ‘অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মহারানীর পানিগ্রহণে এই অধম আন্তরিক ভাবে আগ্রহী – তবে তার তরফ থেকে নিশ্চিত, প্রয়োজনীয় এবং অপরিবর্তনীয় একটা শর্ত আছে । আগামীকাল সকালে, হয়তো বা আজই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাগজপত্র তৈরী হলেই শুভ কাজ সম্পাদন করা হবে । মহারানীর নৈকট্য ছাড়া এই অভাগা কিছুতেই আর এক মুহূর্ত বাঁচতে পারছে না ।’
আউগুস্তিয়াসের দৃষ্টি ক্রমশ নমনীয় হয়ে আসে এবং ক্যাপ্টেনকে খুশি করার জন্য সে ঠোঁটের ফাঁকে কোমল এবং মিষ্টি হাসির রেণু ছড়িয়ে রাখে ।
‘কিন্তু আমি পুনরায় বলছি যে, এটা একটা শর্তের ওপর নির্ভর করে,’ দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ক্যাপ্টেন কথাটা পুনরায় বলতে দ্বিধা বোধ করে । তার মনে হয় আউগুস্তিয়াসের মায়াবিনী চাহনি তাকে রীতিমতো বিভ্রান্ত এবং দূর্বল করেছে ।
‘কোন শর্তে ?’ যুবতী নিজের শরীর পুরোপুরি ঘুরিয়ে এবং ক্যাপ্টেনের চোখের ওপর সরাসরি ট্যাঁরা চোখের দৃষ্টি রেখে জিজ্ঞেস করে ।
‘কোন শর্তে,’ ক্যাপ্টেন রীতিমতো তোতলাতে থাকে, ‘ধরো, আমাদের যদি কোনো সন্তান হয়, তবে আমরা ওদের এতিমখানায় পাঠিয়ে দিব । আসলে বলতে চাচ্ছি, আমি হয়তো কখনই কোনো সন্তান পয়দা করতে পারবো না । ঠিক আছে, তুমি কি মত দিচ্ছ ? দোহাই তোমার, শুধু বলো, হ্যাঁ ।’
‘আমি কেন মত দিব না, ক্যাপ্টেন ভেনেনো ?’ অট্টহাসিতে লুটোপুটি খেয়ে আউগুস্তিয়াস পাল্টা জিজ্ঞেস করে । ‘তুমি ওদের ওখানে নিয়ে যাবে, নতুবা আমরা দু’জনেই যাবো । ওদের রেখে ফিরে আসার সময় আমরা আদর করে চুমু খাবো না, অথবা অন্য কিছু করবো না । তোমার কি মনে হয়, আমরা ওদের ওখানে নিয়ে যাবো ?’
আউগুস্তিয়াস চোখেমুখে আনন্দের নির্মল হাসির রেখা ফুটিয়ে ক্যাপ্টেনের দিকে তাকায় । ক্যাপ্টেনের মনে হয় সেই মুহূর্তে সে গভীর সুখ-আনন্দের বিশাল সমুদ্রের অতলে ডুবে গিয়ে মরতেও রাজী । খুশীতে তার চোখ বেয়ে বানের মতো অশ্রুধারা নেমে আসে । একসময় সে লাজবতী রমনীকে নিবীড় ভাবে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে হালকা গলায় বললো, ‘আমি তোমার ভালোবাসার গহীন বনে হারিয়ে গিয়েছি ।’
‘আমিও তোমার প্রেমে বিলীন হয়ে গেছি । কিছুতেই এখন আর আলাদা করা যাবে না, ক্যাপ্টেন ভেনেনো,’ আবেগের এক বাটি রস গলায় ঢেলে আউগুস্তিয়াস জবাবে বললো ।
*******
১৮৫২ সালের মে মাসের কোনো এক সকালে, অর্থাৎ আপনাদের কাছে চার বছর আগের যে ঘটনা এই মাত্র উল্লেখ করলাম, আমার এক বন্ধু, যে আমাকে ঘটনাটি বলেছে, মাদ্রিদ্রের সান ফ্রানসিস্কো এভিনিউর ওপর এক বিশাল অট্টালিকার সামনে এসে ঘোড়া থামায় । তারপর ঘোড়া থেকে নেমে সে সহিসের দিকে লাগাম ছুড়ে দিয়ে দরোজার সামনে দাঁড়ানো লম্বা কোট গায়ে লোকটিকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেঃ
‘তোমার মনিব কি বাড়ি আছে ?’
‘মহামান্য যদি দয়া করে সিঁড়ি বেয়ে সোজা উপরে চলে যান, তাহলে সেখানেই তার সাক্ষাৎ লাভ করতে পারেন । মান্যবর মনিব কোনো অতিথির আগমনের আগাম সংবাদ শুনতে নারাজ । অনায়াসে যে কেউ তার সম্মুখে যেতে পারে ।’
‘সৌভাগ্যবশতঃ আমি এই বাড়ির ঘুলি-ঘুপচি সবই চিনি,’ সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার সময় আগুন্তুক আপনমনে বললো। ‘পাঠাগারে ! ঠিক আছে, ঠিক আছে, এমন করে কে ভেবেছে যে, ক্যাপ্টেন ভেনেনো একজন বিশিষ্ট পন্ডিত হয়ে গেছে?’
আগুন্তুক এক ঘর থেকে অন্য ঘরে নিবীড় মনে পায়চারী করে । একসময় সে অন্য এক চাকরের সাক্ষাৎ লাভ করে । পুনরাবৃত্তি করে চাকর বললো, ‘মনিব পাঠাগারে আছেন ।’
এবং অবশেষে ক্যাপ্টেন আকাঙ্খিত কক্ষের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং দ্রুত হাতে দরোজা খোলে । দরোজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই তার চক্ষু চড়কগাছ এবং সে টাসকি খেয়ে থমকে যায় । মুহূর্তেই সে অকল্পনীয় দৃশ্যের সামনে পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ।
কক্ষের মাঝখানে কার্পেটে ঢাকা মেঝের ওপর একজন লোক তার দু’হাত এবং দু’পায়ের হাঁটুতে ভর করে হামাগুড়ি দিচ্ছে । লোকটির পিঠের ওপর বছর তিনেকের একটা বাচ্চা ছেলে বসে আছে এবং ছেলেটি দু’পায়ে লোকটির দু’পাশে সজোরে চাটি দিচ্ছে । আরেকটি শিশু, হয়তো বছর দেড়েকের হবে, মাথার সামনে দাঁড়িয়ে লোকটির চুল ধরে অনবরত টানছে । খুশিতে আটখানা হয়ে পশুর গলায় বাঁধা দড়ি টানার মতো বাচ্চা ছেলেটি বাবার গলার রুমাল ধরে জোরে টেনে চিৎকার করে তাগাদা দিচ্ছেঃ
‘হেট্-হেট্, গাধা ! হেট্-হেট্ ।’
লেখক পরিচিতিঃ
গল্পসূত্রঃ ‘ক্যাপ্টেন ভেনেনোর বিয়ের প্রস্তাব’ গল্পটি পেড্রো অ্যান্টোনিও ডি অ্যালারকনের স্পেনিশ থেকে ইংরেজিতে অনূদিত ‘ক্যাপ্টেন ভেনেনো’স প্রপোজাল অফ ম্যারেজ’ ছোটগল্পের অনুবাদ । গল্পটি ই. হ্যাল্ডেম্যান-জুলিয়াস সম্পাদিত ‘ফার্স্ট লাভ এন্ড আদার ফেসিনেটিং স্টোরিজ অফ স্প্যানিশ লাইফ’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে । তবে প্রথমে গল্পটি লেখকের ‘ক্যাপ্টেন ভেনেনো’স প্রপোজাল অফ ম্যারেজ এন্ড আদার স্টোরিজ’ ছোটগল্প সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নিটোল প্রেমের এই গল্পটিতে লেখক একজন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেনের ভালোবাসার পাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া, বিয়ে করা এবং বিবাহোত্তর জীবনের গতানুগতিক এবং চিরাচরিত পরিনতি, অর্থাৎ সংসার এবং সন্তান-সন্ততি, অত্যন্ত সুন্দর এবং প্রাণবন্ত ভাষায় তুলে ধরেছেন ।
***